December 31, 2025, 3:28 pm

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের দাপটে রাজশাহী অঞ্চলে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। গত কয়েকদিন ধরে দিনের তাপমাত্রা ক্রমেই কমে আসছে, যার ফলে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল শতভাগ।
গত তিন দিন ধরে পদ্মা পাড়ের এই জেলায় সূর্যের দেখা মিলছে না। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতের প্রকোপ। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষ। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষেরা রাত কাটাচ্ছেন চরম কষ্টে। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
দিনমজুর নাজমুল জানান, ভোরে কাজের সন্ধানে চারঘাট উপজেলা থেকে রাজশাহী নগরীর তালাইমারীতে এলেও কাজ মেলেনি। তিনি বলেন, ‘আজ খুব ঠান্ডা। এই ঠান্ডার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না, তাই কাজও পাওয়া যাচ্ছে না।’ তিনি আরও জানান, আগে যেখানে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন কাজ পাওয়া যেত, এখন শীতের কারণে সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই বেকার থাকতে হচ্ছে।
রিকশাচালক জাকির আলী বলেন, ‘হুহু করে বাতাস বইছে। খুব ঠান্ডা লাগছে। কষ্টে দিন কাটছে।’
নগরীর ভদ্রা বস্তি এলাকার ৭০ বছর বয়সী মর্জিনা বেগম জানান, তাঁর গায়ে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র নেই। তিনি বলেন, ‘আগে মানুষ কম্বল-টম্বল দিত। কিন্তু এবার কেউ আসেনি। এই জাড়ে টিকে থাকাই কঠিন।’
এদিকে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই নগরী প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। বিকেলের পরপরই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ দোকানপাট।
রাজশাহী বানেশ্বর এলাকার বাসিন্দা তুষার আলম জানান, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার বেশি।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মেঘ কেটে গেলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার রাত ৩টার পর থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। ভোরের দিকে কুয়াশা ঘন হয়ে আসে। কুয়াশার কারণে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মতো অনুভূতি হয়। রাজশাহীসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন থাকতে পারে।’